রিয়াল–রথ ছুটছেই
আড়াই মাস আগের পরিস্থিতিটা ভাবলে কার্লো আনচেলত্তি এখনো হয়তো শিউরে ওঠেন। রিয়াল সোসিয়েদাদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে পরপর দুই ম্যাচে হারায় স্রোতের মতো ধেয়ে আসছে সমালোচনার তির। সেই আনচেলত্তির পায়েই এখন লুটাচ্ছে অর্জনের রঙিন ফুল। পরশু যে রেকর্ডটা গড়লেন, সেটা রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে পাকাপাকিভাবেই লিখে রাখবে ইতালিয়ান এই কোচের নাম। ক্লাবকে টানা ১৬ ম্যাচ জেতানোর কীর্তি যে রিয়ালের আর কোনো কোচের নেই!দুই মাসেরও বেশি এই স্বপ্নযাত্রা ইকার ক্যাসিয়াসেরও যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না, ‘রেকর্ডটা নিয়ে আমরা খুবই খুশি। এটা প্রায় অবিশ্বাস্য যে আমরা দুই মাস হারিনি।’ কিন্তু এই কৃতিত্বের নেপথ্য নায়ক যিনি সেই আনচেলত্তি কী ভাবছেন? রিয়াল কোচের কথা আদ্যন্ত পেশাদারের মতোই, ‘রেকর্ডের জন্য হয়তো কৃতিত্ব পাব, কিন্তু সত্যি বলতে কী এ রকম দুর্দান্ত একটা দলে, দারুণ একঝাঁক খেলোয়াড়কে কোচিং করানোটা ভাগ্যের ব্যাপার।’
পরশু মালাগার সঙ্গে ২-১ গোলের জয়ে অবশ্য একটা ‘নিয়ম’ রক্ষা হয়নি। স্কোরলাইনে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম ওঠেনি, এটি বিস্ময় জাগায় বৈকি! এই মৌসুমে লা লিগার প্রতিটি ম্যাচেই গোল পেয়েছেন সিআর সেভেন। পরশু করিম বেনজেমা ও গ্যারেথ বেলকে দিয়ে দুই গোল করালেও নিজে গোল পাননি। সে জন্য অবশ্য কার্লোস কামেনিকে খানিকটা ‘অভিশাপ’ দিতে পারবেন, রোনালদোকে অন্তত দুবার নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত করেছেন মালাগা গোলরক্ষক।
গোল না পাওয়ায় খানিকটা হতাশ হতে পারেন, তবে শেষ পর্যন্ত রোনালদো এটাকে খুব বড় করে হয়তো দেখবেন না। আনচেলত্তি এদিন বরং তাঁর তুরুপের তাসের প্রশংসায় একটু বেশিই উচ্ছ্বসিত, ‘সে দুর্দান্ত খেলেছে, ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। তবে এটা ঠিক ওকে গোল করতে দেখে আমরা এতটাই অভ্যস্ত যে ব্যাপারটা একটু অদ্ভুতই মনে হচ্ছে। কিন্তু সে দুটি গোল করিয়েছে, জয়ে বড় অবদান রেখেছে।’
জয়টা এখন আনচেলত্তিকে অনন্য একটা হাতছানি দেখাচ্ছে। এর আগে ১৯৬০-৬১ মৌসুমে মিগুয়েল মুনোজ ও তিন মৌসুম আগে হোসে মরিনহো টানা ১৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন। পরশু সেটি তো ছাড়িয়ে গেছেনই, আর তিন ম্যাচ জিতলে পেরিয়ে যাবেন ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের স্প্যানিশ রেকর্ডও। অক্টোবর ২০০৫ থেকে জানুয়ারি ২০০৬ পর্যন্ত টানা ১৮ ম্যাচ জিতেছিল রাইকার্ডের বার্সেলোনা। আনচেলত্তির জন্য আশার কথা, পরের তিনটি ম্যাচই রিয়াল খেলবে বার্নাব্যুতে। প্রথমটি তো তৃতীয় বিভাগের দল কর্নেয়ার সঙ্গে কোপা ডেল রেতে, পরেরটিতে প্রতিপক্ষ সেল্টা ভিগো। এরপরের ম্যাচটা চ্যাম্পিয়নস লিগে, প্রতিপক্ষ লুদোগোরেৎস।
No comments:
Post a Comment