নতুন বিপাকে সালমান!
ভালোই বিপাকে পড়েছেন সালমান খান। গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার মামলাটা বেশ ভোগাচ্ছে তাঁকে। মাস ছয়েক আগে এ মামলার দুই সাক্ষী জানিয়েছিলেন, মুম্বাইতে ২০০২ সালে দুর্ঘটনার সময় সালমান মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এবার একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান জানালেন, দুর্ঘটনার পর সালমানের রক্তে ৬২ মিলিগ্রাম অ্যালকোহলের অস্তিত্ব ধরা পড়ে, যেখানে অনুমতিযোগ্য মাত্রা ৩০ মিলিগ্রাম।
গতকাল বুধবার ওই ল্যাব টেকনিশিয়ান মুম্বাই সেশন কোর্টকে জানান, দুর্ঘটনার পর অ্যালকোহল পরীক্ষায় উতরাতে পারেননি সালমান। তাঁর রক্তে অনুমতিযোগ্য অ্যালকোহলের মাত্রার দ্বিগুণ পরিমাণ অ্যালকোহলের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া।
সালমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মদ খেয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে ২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাত তিনটার দিকে বান্দ্রার আমেরিকান এক্সপ্রেস বেকারির সামনে ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা পাঁচজন হতদরিদ্র মানুষকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যান সালমান। তাঁর টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির চাপায় একজন নিহত ও চারজন আহত হন। অবশ্য সালমানের পক্ষ থেকে বরাবরই দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনার সময় তিনি চালকের আসনে ছিলেন না।
মামলার সাক্ষী বলিউডের অভিনেতা চাঙ্কি পাণ্ডের ভাই চিকি পাণ্ডে মুম্বাই সেশন কোর্টের বিচারক ডি ডব্লিউ দেশপাণ্ডের কাছে দাবি করেছিলেন, দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সালমানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি (সালমান) মদ খেয়েছিলেন বলে মনে হয়নি। এ প্রসঙ্গে চিকি পাণ্ডের ভাষ্য ছিল, ‘পরদিন সকাল নয়টায় আমি সালমানের বাসায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করি। আমি তাঁকে আলিঙ্গনও করি। কিন্তু মদের গন্ধ পাইনি।’
চিকি পাণ্ডে আরও জানান, দুবাই থেকে আমদানি করা একটি গাড়ি কেনার জন্য তিনি সালমানকে সাহায্য করেন। ওই গাড়িতে চাপা পড়েই হতাহতের ঘটনা ঘটে। গাড়ির মালিক ছিলেন আবদুল রেহমান। তাঁকে ১২ লাখ ও দুই লাখ রুপির দুটি চেক দিয়ে গাড়িটি নেন সালমান। দুর্ঘটনার সময় গাড়ির মালিকানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় তখনো গাড়ির মালিক হিসেবে আবদুল রেহমানের নামই ছিল।
গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার মামলায় সালমানের বিচারকার্যক্রম শুরু হয় ২০০৫ সালে। বেপরোয়া ও অসতর্কভাবে গাড়ি চালানোর কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে রায় দেওয়া হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(১) ধারায় এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মাত্র দুই বছরের কারাদণ্ড।
পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালে সালমানকে কঠোর সাজা দেওয়ার দাবি তোলা হয় মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে। পরে মামলার বিচারকার্যক্রম আবার শুরু হয়। যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর গত বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২) ধারায় সালমানের সাজা হওয়ার আশঙ্কার কথা জানানো হয় আদালতের পক্ষ থেকে। গুরুতর এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড। বিষয়টি জানার পরপরই আপিল করেন সালমান। কিন্তু তাঁর আপিল খারিজ করে দিয়ে মুম্বাই সেশন কোর্টের বিচারক ইউবি হেজিব সাফ জানিয়ে দেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২) ধারাতেই সালমানের বিচারকার্যক্রম চলবে।
No comments:
Post a Comment